গাজীপুরের ইতিহাস: মসলিন থেকে গার্মেন্টস শিল্পের উত্থান।

গাজীপুরের ইতিহাস: মসলিন থেকে গার্মেন্টস শিল্পের উত্থান।


গাজীপুরের ইতিহাস: মসলিন থেকে গার্মেন্টস শিল্পের উত্থান।


আড়াইশ বছর আগে, গাজীপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে চাষ করা হতো কার্পাস তুলা, সেই তুলা থেকে তৈরি হতো সুতা, আর সেই সুতায় বোনা হতো জগদ্বিখ্যাত মসলিন কাপড়। 


গাজীপুরের ইতিহাস যেন আজও তার ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে, কারণ আড়াইশ বছর পর সেই একই অঞ্চল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের গার্মেন্ট শিল্পের প্রাণকেন্দ্র। দেশের মোট গার্মেন্টস শিল্পের ৯৫ শতাংশই এখন এখানে অবস্থিত, যা ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।


বলছিসেই ঐতিহাসিক মসলিনের কথা, যা বাংলার গৌরবময় অতীতকে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরেছিল। ঢাকাই মসলিন ছিল সূক্ষ্ম, মোলায়েম, আর আশ্চর্যজনকভাবে হালকা—এটি শুধুমাত্র বাংলা বা মুঘল রাজদরবারেই নয়, বরং পুরো পৃথিবীতে এর ছিল বিপুল চাহিদা।


এই বিখ্যাত মসলিনের সূচনা হয়েছিল ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে। বিশেষ করে গাজীপুরের কাপাসিয়া এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর তীরবর্তী জমিতে কার্পাস তুলার ব্যাপক চাষ হতো, যা থেকে তৈরি হতো মসলিনের সূতা। কাপাসিয়ার নামকরণের ইতিহাসও এখান থেকে এসেছে।


যদিও মসলিন এখন ইতিহাসের এক অধ্যায়, গাজীপুর আজ সেই ঐতিহ্যকে আবারও নতুনভাবে তুলে ধরেছে তার গার্মেন্টস শিল্পের মাধ্যমে। গাজীপুরের টঙ্গী, কোনাবাড়ী, মাওনা, এবং চন্দ্রার মতো এলাকায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য গার্মেন্টস কারখানা, যেগুলো প্রতিদিন আন্তর্জাতিক বাজারে পোশাক রপ্তানি করছে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।


আড়াইশ বছর আগে যেমন মসলিন বাংলার জন্য গৌরবের প্রতীক ছিল, আজ গাজীপুরের তৈরি পোশাক সেই গৌরবকে নতুনভাবে বহন করছে বিশ্বের বাজারে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন